Pages

Pages

Tuesday, January 22, 2019

নামাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

নামাজ বলা হয় নির্ধারিত সময়ে, নির্দিষ্ট কিছু শর্ত সাপেক্ষে, নির্ধারিত কিছু ইবাদত করাকে। নামাজ ইসলামের পাঁচটি ভিত্তির মধ্যে একটি। কালিমার পরেই এর স্থান। একজন মুসলমানের ঈমান আনয়নের পরে সর্বপ্রথম কাজ হচ্ছে নামাজ আদায় করা। মুসলমানদের জীবনে নামাজের গুরুত্ব রয়েছে অপরিসীম। কেননা, মহান আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনের অসংখ্যা জায়গায় মুমিনকে নামাজের আদেশ দিয়েছেন। এবং নামাজের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে বলেন, “মুমিনরাই সফল, যারা তাদের নামাজের প্রতি একনিষ্ঠভাবে মনোযোগী”। (সুরা মুমিনুন- ১-২) 
এছাড়াও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, “ঐ সত্তার কসম, যার হাতে আমার জীবন। আমার মনে চায়, আমি আদেশ দেই কিছু লাকড়ি একত্র করার। এরপর আমি কাউকে আদেশ দেই আযান দেওয়ার, এরপর কাউকে নামাজের ইমামতির আদেশ দেই, তারপর মানুষের বাড়িতে যাই, যারা নামাজে হাজির হয়নি তাদের বাড়িগুলোতে তাদেরসহ আগুন লাগিয়ে দেই। কিন্তু নারী ও শিশু থাকার দরূন আমি এমনটা করি না।” (বুখারী ও মুসলিম) 
উল্লেখিত কুরআনের আয়াত ও হাদীসের ন্যায় আরো অনেক আয়াত ও হাদীসে কোথাও ধমক দিয়ে বা শাস্তির ভয় দেখিয়ে আবার কোথাও পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে নামাজের গুরুত্ব বুঝানো হয়েছে।
নামাজের গুরুত্বের উপর এত জোড়দার করার তাৎপর্য রয়েছে অনেক। যার কিছু আমরা কুরআন ও হাদীসে পাই। কিন্তু বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে এর চেয়ে অনেক বেশী তাৎপর্য নিহিত রয়েছে নামাজে। নামাজের সবচেয়ে বড় তাৎপর্য হচ্ছে, “কাফের ও মুমিনদের মাঝে পার্থক্য করা”। (বুখারী) যেমনটা হাদীসে পাওয়া যায়। কুরআনে আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।” (সুরা আনকাবুত-৪৫) 

আমরা এই আয়াতের দ্বারা বুঝতে পারি যে, যদি এ দেশের যুব সমাজকে ইভটিজিং, ধর্ষণ, খুন, ডাকাতি, চুরি-ছিনতাই, ঘুষ ও দুর্নীতি মুক্ত রাখতে হয়, তবে তাদেরকে নামাজের প্রতি উৎসাহিত করতে হবে। এবং দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকলের উপরে নামাজের গুরুত্বারোপ করার পদক্ষেপ কার্যকারী হবে বলে গন্য। অন্যত্র আল্লাহ বলেন, যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে এবং নামাজ ও যাকাত করেছে, তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে রয়েছে উত্তম প্রতিদান। তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা কখনো চিন্তিত হবে না। (সূরা বাকারা-২৭৭) 
এখানে যেই বিষয়টা আমাদের সামনে পরিস্কার হয়ে আসে তা হচ্ছে যারা নামাজ পড়ে তারা কখনো শত্রুকে ভয় পায় না। যদি দেশের উপর কখনো শত্রুর আক্রমণ হয় তবে তারাই নির্ভয়ে ও নিশ্চিন্তে যুদ্ধ করে দেশকে শত্রুমুক্ত করে আনতে পারবে। অর্থাৎ, ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যেই স্বাধীনতা অর্জন করেছি, তা অক্ষুন্ন রাখতে হলে নামাজের কোন বিকল্প নেই। এবং নামাজের দ্বারাই বর্তমান তারুন্যের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে। এছাড়াও নামাজের দ্বারা মানুষের মাঝে ভালবাসা ও বন্ধুত্বের বন্ধন সৃষ্টি হয়। এছাড়াও দিনে পাচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার দ্বারা দিনের প্রয়োজনীয় শারীরিক ব্যায়ামও হয়ে যায়। ফলে নামাজ শারীরিক সুস্থতার জন্য উপকারী বলে বিবেচ্য। এছাড়াও দিনে পাচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করার পিছনে আল্লাহর জ্ঞানে আমাদের অজানা আরো অনেক তাৎপর্য রয়েছে। 

0 comments:

Post a Comment